গভর্নমেন্ট সিকিউরিটিজ বা G-Sec কি?

গভর্নমেন্ট বা সরকারী সিকিউরিটিজ (সংক্ষেপে G-Sec বা Government Securities) হল সার্বভৌম সরকার কর্তৃক জারীকৃত ও স্বীকৃত একটি বাণিজ্যযোগ্য উপকরণ। এটি মূলত সরকারের ঋণের বাধ্যবাধকতা স্বীকার করে। এই ধরনের সিকিউরিটিজ গুলো স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে।

বাংলাদেশের প্রধান সরকারী সিকিউরিটিজ (G-Sec) কি কি?

বাংলাদেশের প্রধান G-Sec হল-

১/ Treasury Bills বা ট্রেজারি বিল (টি-বিল) এবং

২/ Bangladesh Government Treasury Bond (BGTB) বা বাংলাদেশ সরকারের ট্রেজারি বন্ড (বিজিটিবি)।

১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে চুক্তি অনুসারে (ট্রেজারি বিধি-১৯৯৮ (পরিশিষ্ট-১, ধারা-৩) এবং বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) আদেশ-১৯৭২, অনুচ্ছেদ ২০ বাংলাদেশ ব্যাংক কে নতুন ঋণ প্রদান এবং সরকারী ঋণ পরিচালনার ক্ষমতা দেয় সরকার। অর্থাৎ, বাংলাদেশ ব্যাংকই টি-বিল ও বিজিটিবি পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

ট্রেজারি বিলের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?

▶️ এটি মূলত স্বল্পমেয়াদী হয়ে থাকে। তিনটি টেনারে বা সময়ের ব্যাপ্তিতে পাওয়া যায় যথা ৯১ দিন, ১৮২ দিন এবং ৩৬৪ দিনের।

▶️ এর মূল্য বাজার দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে।

▶️ এগুলো ডিস্কাউন্টেড মূল্যে ইস্যু করা হয় এবং মেয়াদান্তে অভিহিত মূল্যে পুনরায় কিনে নেয়া হয়।

▶️ এগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য।

▶️ স্ক্রিপ্টলেস বা ডিম্যাটরিয়ালাইজেশন আকারে ইস্যু করা হয় অর্থাৎ অস্পর্শনীয়।

▶️ বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে মাসিক অকশন ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে।

ট্রেজারি বন্ডের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো কি কি?

▶️ এটি ঝুকিমুক্ত ফিক্সড কুপন ভিত্তিক ঋণপত্র।

▶️ এর মেয়াদ ২ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে।

▶️ এটি অর্ধবার্ষিক হারে সুদ প্রদান করে থাকে এবং মেয়াদপূর্তিতে মূল অর্থ পরিশোধ করা হয়।

▶️ এতে বিনিয়োগের লাভের হার বাজার দ্বারা নির্ধারিত হয়।

▶️ এগুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য।

▶️ এটিও স্ক্রিপ্টলেস বা ডিম্যাটরিয়ালাইজেশন আকারে ইস্যু করা হয় অর্থাৎ অস্পর্শনীয়।

ট্রেজারি বিল এবং বিজিটিবি কিভাবে ইস্যু করা হয়?

সাপ্তাহিক (সাধারণত রবিবার) পূর্ব-ঘোষিত নিলাম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট মূল্য অনুসরণ করে ট্রেজারি বিলের নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। দরদাতারা তাদের মূল্য প্রস্তাব করেন, নিলাম কমিটি প্রস্তাবিত মূল্য থেকে কাট-অফ মূল্য নির্ধারন করে।

সাপ্তাহিক (সাধারণত মঙ্গলবার) পূর্ব-ঘোষিত নিলাম ক্যালেন্ডার অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট মূল্যে নির্দিষ্ট মেয়াদী বিজিটিবির নিলাম অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নতুন ইস্যুর ক্ষেত্রে দরদাতারা তাদের প্রত্যাশিত ঈল্ড প্রস্তাব করেন এবং রি-ইস্যুর নিলামে তাদের মূল্য প্রস্তাব করতে হয়।

ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করে আপনি কি সুবিধা পেতে পারেন?

▶️ যেহেতু এটি সার্বভৌম সরকার কতৃক ইস্যু করা হয় তাই এটি একটি সম্পূর্ন ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ।

▶️ আকর্ষনীয় সুদের হার।

▶️ যেহেতু এই বন্ড গুলো সেকেন্ডারি মার্কেটে লেনদেনযোগ্য, তাই যে কেউ তা বাজারে বিক্রয় করে তাৎক্ষনিক তারল্যের সুবিধা পেতে পারে।

▶️ বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেয়াদান্তের সমস্ত রশিদ ও সুদ সম্পূর্ণরুপে ফেরতযোগ্য।

▶️ এতে বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সেরা পরিষেবাটি পেতে পারেন যা মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার মডিউল বা MI Module নামে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় স্ক্রিপলেস ডিপোজিটরি সিস্টেম পরিচালনা করে।

কারা নিলামে অংশগ্রহন করতে পারে?

প্রাইমারি ডিলার (Primary Dealer বা PD) নিলামে বিড করতে বা দর ডাকতে পারে। অন্যান্য বানিজ্যিক ব্যাংক এবং নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বীমা কোম্পানি, কর্পোরেট সংস্থা, ব্যাক্তি, প্রভিডেন্ড ফান্ড ইত্যাদিও PD এর মাধ্যমে নিলামে অংশ নিতে পারে।

একটি নিলামে সর্বনিন্ম বিডের পরিমাণ কত?

নূন্যতম বিডের পরিমাণ ১ লক্ষ টাকা এবং এর গুণিতক।

কারা G-Sec এ বিনিয়োগ করতে পারে?

বাংলাদেশে বসবাসকারী ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠান যেমনঃ

▶️ ব্যাংক, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান

▶️ বীমা কোম্পানি

▶️ কর্পোরেট সংস্থা

▶️ প্রভিডেন্ড ফান্ড বা ভবিষ্যৎ তহবিল, পেনশন তহবিল ইত্যাদি ব্যাবস্থাপনার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কতৃপক্ষ।

কোনো ব্যাক্তি বিনিয়োগকারী কি G-Sec কিনতে পারেন?

হ্যা, যে কোন ব্যাক্তি নিলামে প্রাথমিক ডিলার/তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারী সিকিউরিটিজ কিনতে পারেন। এছাড়াও সেকেন্ডারি মার্কেটের যে কোন PD/ব্যাংক/NBFIs থেকে G-Sec কিনতে পারেন।

কোন ব্যাক্তি কিভাবে G-Sec কিনতে পারে?

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল অফিসে হিসাব রক্ষণাবেক্ষণকারী তফসিলি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিলামে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্কেট ইনফ্রাস্ট্রাকচার (MI) মডিউলে তাদের ব্যক্তিগত/প্রাতিষ্ঠানিক গ্রাহকদের অনুকূলে বিজনেস পার্টনার আইডেন্টিফিকেশন (BP ID) খোলার উদ্যোগ নেয়। এছাড়াও ব্যক্তি বিনিয়োগকারীগণ MI মডিউলের কাউন্টার (OTC)/ট্রেডার ওয়ার্ক স্টেশন (TWS) এর মাধ্যমে সেকেন্ডারি মার্কেটে সরকারী সিকিউরিটি কিনতে বা বিক্রি করতে পারে।

বিদেশী/অনাবাসীরা কি G-Sec কিনতে পারে?

হ্যাঁ, বিদেশী/অনাবাসী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান প্রাইমারী ও সেকেন্ডারি মার্কেট থেকে প্রাথমিক ডিলার (PD) এবং অন্যান্য ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারী ট্রেজারি বন্ড (বিজিটিবি) কিনতে পারে। বন্ডের ক্রয় মূল্য বিনিয়োগকারীদের তহবিল থেকে অনাবাসীক বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টে এবং অনাবাসীক বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশী টাকা অ্যাকাউন্টে (NITA) বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।

কুপনের অর্থপ্রদান এবং পুনঃবিক্রয়/খালাসকৃত আয়ের উপর প্রযোজ্য কর কাটার পরে তা বিদেশী মুদ্রায় অবাধে স্থানান্তরযোগ্য। একজন অনাবাসীর দ্বারা কেনা বন্ড অবাধে যেকোনো সময় (কোন লক ইন পিরিয়ড নেই) অন্য যেকোনো বাসিন্দা বা অনাবাসীর কাছে পুনরায় বিক্রি করা যায়।

বিদেশী বিনিয়োগকারী কি ধরনের বন্ড ক্রয় করতে পারেন?

যোগ্য বিদেশী বিনিয়োগকারীদের যেকোনো মেয়াদের ট্রেজারি বন্ড ক্রয়, বিক্রয় বা স্থানান্তর করার অনুমতি দেওয়া হয়।

একটি নিলামে সর্বনিম্ন বিডের পরিমাণ কত?

নূন্যতম বিডের পরিমাণ এক লাখ বা ০.১ মিলিয়ন টাকা এবং এর গুণিতক।

G-Sec এর জন্য কি প্রিম্যাচিউর এনক্যাশমেন্ট পাওয়া যায়?

না, এক্ষেত্রে প্রিম্যাচিউর এনক্যাশমেন্ট পাওয়া যায় না। তবে এর ধারক OTC এবং সেকেন্ডারি মার্কেটে G-Sec বিক্রয় করে নগদ অর্থ সংগ্রহ করতে পারে।

G-Sec কেনাবেচার নিষ্পত্তিতে ঝুঁকির পরিমাণ কতটুকু?

সরকারি সিকিউরিটিজ কেনাবেচার ক্ষেত্রে Delivery versus Payment বা সংক্ষেপে DVP মেথড ব্যাবহৃত হয়ে থাকে যা খুব সহজ, নিরাপদ ও কার্যকর একটি ব্যবস্থা। DVP প্রক্রিয়ায় ক্রেতার কাছ থেকে তহবিল স্থানান্তরের সাথে সাথে বিক্রেতার দ্বারা সিকিউরিটিজ স্থানান্তর নিশ্চিত করে, যার ফলে নিষ্পত্তির ঝুঁকি হ্রাস পায়।

সরকারী সিকিউরিটিজের বিপরীতে ঋণ নেওয়া কি সম্ভব?

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো শুধুমাত্র রেপো মার্কেটে তহবিল ধার নেয়ার জন্য জামানত হিসেবে সরকারী সিকিউরিটিজ ব্যবহার করতে পারে।

একটি প্রাথমিক ডিলার (PD) কি?

প্রাথমিক ডিলার হল সে সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠান যারা প্রাথমিক নিলামে সরকারি সিকিউরিটিজের আন্ডাররাইটার হিসেবে কাজ করে থাকে। নিলাম কমিটি প্রস্তাবিত বিডগুলোকে অগ্রহনযোগ্য মনে করলে প্রাইমারি ডিলারদের (PDs) উপর সিকিউরিটিজ হস্তান্তর করতে পারে। প্রাইমারি ডিলাররা সফল বিড এবং হস্তান্তরিত টাকার পরিমাণের উপর পর্যায়ক্রমিক আন্ডাররাইটিং কমিশন পায়।

বাংলাদেশে মোট প্রাথমিক ডিলারের (PD) সংখ্যা কত?

বাংলাদেশে বর্তমানে ২৩টি প্রাথমিক ডিলার রয়েছে। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো PD হিসেবে কাজ করে।

১০ই অক্টোবর ২০২২ সাল হতে পরীক্ষামূলক ভাবে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে সরকারী সিকিউরিটিজের লেনদেন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীগন প্রাথমিক ডিলার (PD) ব্যাতীত তাদের নিজস্ব বিও একাউন্ট (Beneficiary Owner Account) এর মাধ্যমে সাধারণ ব্রোকারেজ হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকে সাধারণ শেয়ারের ন্যায় সরকারী সিকিউরিটিজও (ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ড ইত্যাদি) লেনদেন করতে পারবেন।

এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীগণ তাদের পোর্টফোলিওতে সরকারী সিকিউরিটিজের মত ঝুঁকিমুক্ত বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত করে তাদের পোর্টফোলিওর ঝুঁকি হ্রাস করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ট্রেড করা সিকিউরিটিজের অভিহিত মূল্য হবে ১০০ টাকা এবং মার্কেট লট হবে ১০০০টি অর্থাৎ, এখানেও নূন্যতম লেনদেনের পরিমাণ হবে ১ লাখ টাকা।

ব্রোকার হাউজের মাধ্যমে G-Sec ট্রেডিং:

স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের মাধ্যমে G-Sec ট্রেডিং করার আগে কিছু শব্দের ব্যাখ্যা জানতে হবে, যেমন-

▶️ BOID- Beneficiary Owner Identification এর সংক্ষিপ্ত রূপ  যা ডিপজিটরি আইন ১৯৯৯ (১৯৯৯ সনের ৬ নং আইন) দ্বারা প্রতিপালিত হয়। এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে সাধারণ শেয়ার লেনদেন করা হয়।

▶️ BPID- Business Partner Identification এর সংক্ষিপ্ত রূপ যা পরিচালিত হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের (BB) অধীনস্ত Subsidiary General Ledger (SGL) অথবা Investment Portfolio Securities (IPS) accounts এর মাধ্যমে সরকারী সিকিউরিটিজ বা G-Sec এ বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে।

▶️ Depository- মানে Central Depository Bangladesh Limited বা সংক্ষেপে CDBL যা ডিপজিটরি আইন ১৯৯৯ (১৯৯৯ সনের ৬ নং আইন) দ্বারা নিবন্ধিত এবং যারা BOID এবং পুঁজিবাজারের সকল শেয়ার নথিবদ্ধ ও প্রতিপালন করে থাকে।

▶️ Market Infrastructures Module বা MI Module- বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রিত একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যাবস্থাপনা প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সরকারী সিকিউরিটিজ (ট্রেজারি বিল, ট্রেজারি বন্ড ইত্যাদি) নথিভুক্ত ও প্রতিপালন করা হয়।

▶️ Clean Price- সঞ্চিত সুদ/মুনাফা বাদে সরকারী কুপন বন্ডের বর্তমান বাজার মূল্য। এই মূল্যে বন্ডের জন্য নির্ধারিত কুপন পেমেন্টের মধ্যে অর্জিত কোন সুদ অন্তর্ভুক্ত থাকে না।

▶️ Dirty Price- এটি হল সঞ্চিত সুদ বা অর্জিত মুনাফা যুক্ত বন্ডের মূল্য যাতে কুপন পেমেন্টের মাধ্যমে অর্জিত সুদ ও কমিশন অন্তর্ভুক্ত থাকে। (Executed or Clean Price + Accrued Interest or Profit) X Executed Quantity + Trade commission) = Dirty Price

একাউন্ট খোলা, সিকিউরিটিজ স্থানান্তর ও লেনদেন ইত্যাদিঃ

১/ বিও আইডির মাধ্যমে স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে G-Sec এর ট্রেডিং করার জন্যঃ

স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মের মাধ্যমে G-Sec এর লেনদেন করার জন্য একজন গ্রাহকের BPID এবং BOID উভয়ই প্রয়োজন হবে। এক্ষেত্রে একজন BPID ধারক তার বর্তমান BOID ব্যাবহার করতে পারেন (যদি থাকে) অথবা নতুন BOID খুলে তার অধিভুক্ত G-Sec তার BPID থেকে BOID তে স্থানান্তর করতে পারবে।

একইভাবে, BOID ধারকগণ তাদের অধিভুক্ত G-Sec চাইলে তার বর্তমান BPID তে (যদি থাকে) স্থানান্তর করতে পারবে অথবা নতুন BPID খুলে সেখানে স্থানান্তর করতে পারবেন।

যদি কোন গ্রাহক বা বিনিয়োগকারী স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে কোন G-Sec ক্রয় করতে আগ্রহী হন (উদাহরণ স্বরূপ BOID ধারী) তাহলে তাকে MI Module এ BPID খুলতে হবে। এক্ষেত্রে BPID খোলার জন্য CDBL সেই ক্রেতার BOID এর বিস্তারিত বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রেরণ করবে।

এসকল কার্য সম্পন্ন করার জন্য অবশ্যই Mutual Agreement বা পারস্পারিক চুক্তি থাকতে হবে।

২/ G-Sec এর অর্থ লেনদেন ও নিষ্পত্তি ট্রেডিং ডে তেই (T+0) সম্পন্ন করতে হবে (ক্রেতার ক্ষেত্রে মূল্য পরিশোধ ও বিক্রেতার ক্ষেত্রে G-Sec পরিশোধ)। আর G-Sec এর নিষ্পত্তি হবে ট্রেডিং এর তৃতীয় দিন বা T+2 অনুযায়ী (ক্রেতার ক্ষেত্রে G-Sec গ্রহন ও বিক্রেতার ক্ষেত্রে তহবিল স্থানান্তর)।

৩/ কুপন পেমেন্ট ডেটের পূর্বে দুই দিন G-Sec এর ট্রেড সাসপেন্ড থাকবে অর্থাৎ রেকর্ড ডে এবং তার পূর্বের দিন। কুপন পেমেন্ট ডের পূর্বের শেষ ট্রেডিং ডে কে রেকর্ড ডে হিসেবে বিবেচনা করা হবে। G-Sec এর ক্ষেত্রে কোন স্পট ট্রেডিং থাকবে না। কুপন ডেটের সর্বনিন্ম সাত কর্ম দিবস পূর্বে স্টক এক্সচেঞ্জকে রেকর্ড ডেটের তারিখ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে।

৪/ স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে G-Sec এর ট্রেডিং হবে Clean Price এ এবং নিষ্পত্তি হবে Dirty Price এ।

G-Sec এর ক্রেতা তার সম্পূর্ন ক্রয় মুল্য Dirty Price অনুযায়ী বিক্রেতাকে প্রদান করবে।

ধরা যাক, ২০০০ পরিমাণ G-Sec ১০২.৩৭ টাকা দরে লেনদেন হয়েছে এবং সঞ্চিত সুদ ৩.৪২ টাকা। সেক্ষেত্রে এই ট্রেডের নিষ্পত্তি হবেঃ (১০২.৩৭ + ৩.৪২) X ২০০০ + ৫.০ = ২,১১,৫৮৫.০০ টাকায়।

স্টক এক্সচেঞ্জ প্লাটফর্মে G-Sec এর লেনদেন নথিভুক্ত করবে CDBL এবং অর্থের লেনদেন তদারকি করবে স্টক এক্সচেঞ্জ ও বাংলাদেশ ব্যাংক।