শেয়ারের শ্রেণীবিভাগ: আপনার যা জানা দরকার

একটি কোম্পানীর শেয়ার হোল্ডারদের মধ্যে বাৎসরিক লভ্যাংশ বন্টন ও বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠীতের ভিত্তিতে তাদেরকে A, B, G, N এবং Z এই ৫টি বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের সাধারণভাবে ভালো-মন্দ শেয়ার চিনিয়ে দেয়ার জন্য এই বিভাগীকরণ করা হয়েছে। নিচে বিভাগগুলোর কাজ বর্ণনা করা হলোঃ

শেয়ারের শ্রেণীবিভাগ

A-Category :

নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা করাসহ ১০% বা তার ঊর্ধ্বে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানিগুলো এ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।

B-Category :

নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা করা সহ ১০% বা এর নিচে লভ্যাংশ (Dividend) প্রদানকারী কোম্পানিগুলো এ গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত।

G-Category :

গ্রিন ফিল্ড অর্থাৎ শেয়ারবাজারে আসার আগে উৎপাদন কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে শুরু করেনি এমন কোম্পানিগুলো এই গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। DSE - র ইতিহাসে এ পর্যন্ত একমাত্র লাফার্জ-সুরমা সিমেন্টই উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করার আগে এই ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত হয় ও পরবর্তীতে কোনো লভ্যাংশ দিতে না পারায় কোম্পানিটিকে Z - গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

N-Category :

নতুন লিস্টেড কোম্পানীগুলো তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা ও লভ্যাংশ প্রদানের আগ পর্যন্ত এই ক্যাটাগরির অন্তর্ভুক্ত থাকে। পরবর্তিতে তাদের বার্ষিক সাধারণ সভা ও লভ্যাংশ বন্টনের ভিত্তিতে তাদেরকে অন্যান্য ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

পরপর দুই বছর যদি কোন N ক্যাটাগরির শেয়ার তাদের সাধারণ বার্ষিক সভা করতে ব্যার্থ হয় অথবা লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যার্থ হয় তবে তাদের কে Z ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়।

Z-Category :

বার্ষিক সাধারণ সভা ও লভ্যাংশ বন্টন করতে ব্যার্থ অথবা ৬ মাসের অধিক সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ অবস্থায় আছে এমন কোম্পানীগুলোকে এ ক্যাটাগরিতে ফেলা হয়।

শেয়ারের শ্রেণীবিভাগ সমূহ জানা কেন জরুরি ?

শেয়ারের এই শ্রেনীবিভাগের ভিত্তিতেই শেয়ার কেনা-বেচা পরবর্তী শেয়ার ও বিক্রয়লব্ধ অর্থের নিষ্পত্তি করা হয়ে থাকে। কারণ একটি শেয়ার ক্রয়ের পর পর সঙ্গে সঙ্গেই কেউ তা বিক্রয় করতে পারে না কিংবা কারো হিসাবে তৎক্ষণাৎ টাকা জমা হয়ে যায় না।

বরং ২/৪ দিন পর বিও একাউন্টে শেয়ার কিংবা টাকা জমা হয়। আর এই প্রক্রিয়া বিভিন্ন গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম সময় লাগে। এবার দেখা যাক কোন কোন গ্রপের শেয়ার কয় দিন পর একাউন্টে জমা হবে।

A, B, G, N গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় ৩ দিন। অর্থাৎ ট্রেডিং এর ৩য় দিন শেয়ার কিংবা টাকা পাওয়া যাবে। তখন বিনিয়োগকারী তার ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রি করতে পারবেন বা বিক্রীত শেয়ারের টাকা তুলতে পারবেন।

Z গ্রুপের ক্ষেত্রে এ সময় লাগে ৪ দিন। অর্থাৎ ৪র্থ দিন শেয়ার কিংবা টাকা পাওয়া যাবে। তখন ক্রয়কৃত শেয়ার বিক্রয় করা যাবে বা বিক্রীত শেয়ারের টাকা উত্তোলন করা যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন জাগতে পারে, Z গ্রুপের শেয়ারের ক্ষেত্রে কেন একদিন বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়?

কী কী শর্ত সাপেক্ষে গ্রুপিং করা হয় তা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে। খেয়াল করলেই দেখে যাবে যে Z গ্রুপ হচ্ছে সবচেয়ে কম কিংবা বিনা লাভ প্রদানকারী কোম্পানির শেয়ার। এজন্যই এই গ্রুপের শেয়ার ক্রয়/বিক্রয় নিষ্পত্তিতে অতিরিক্ত ১দিন সময় বরাদ্দ দেয়া হয়।

Clearing and Settlement বা শেয়ার ও অর্থ নিষ্পত্তির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো স্পট ট্রেড (Spot trade)। যখন কোন কোম্পানী লভ্যাংশ বন্টনের জন্য বার্ষিক সভায় শেয়ারহোল্ডারদের অংশগ্রহনের জন্য কোন রেকর্ড ডেট নির্ধারন করে তখন সেই রেকর্ড ডেটের আগের ৩ দিন প্রায়োরিটি বেসিসে সেই সব কোম্পানীর শেয়ার নিষ্পত্তির জন্য স্পট ট্রেডিং এর ব্যাবস্থা করা হয়। স্পট ট্রেডের ক্ষেত্রে মাত্র ১ দিনে শেয়ার ও টাকা বিও একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।